অর্ধেকের বেশি আইসিইউ খালি
![](https://www.bdnewstracker.com/wp-content/uploads/2021/05/images-80.jpeg)
► ৭৯% জেনারেল বেড ও ৫৯% আইসিইউ বেড খালি
► দুই দিন পরে দৈনিক শনাক্ত বেড়ে আবার ১০%—এর কাছে, মৃত্যু কমে ৩৭
![অর্ধেকের বেশি আইসিইউ খালি](https://www.kalerkantho.com/assets/news_images/2021/05/08/023617Corona-01_kalerkantho_pic.jpg)
দেশে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু দুটোই তুলনামূলক কমে আসছে। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে শনাক্ত দৈনিক দুই হাজারের নিচে এবং মৃত্যু ৪০ থেকে ৬০ জনের কাছাকাছি ওঠানামা করছে। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে হাসপাতালগুলোতে। মাত্র কয়েক দিন আগেও যেখানে হাসপাতালের আইসিইউ বেড পাওয়ার জন্য হাহাকার অবস্থা ছিল, জেনারেল বেডও পাওয়া যায়নি, সেখানে এখন প্রায় ৭৯ শতাংশ জেনারেল বেড ও প্রায় ৫৯ শতাংশ আইসিইউ খালি পড়ে আছে।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল জানানো হয়েছে, দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরো ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
প্রায় দেড় মাস পর মৃত্যুর সংখ্যা চল্লিশের নিচে নেমেছে।
সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, দেশে এখন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল মিলে করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত জেনারেল বেডের সংখ্যা ১২ হাজার ৪৮টি। এর মধ্যে গতকাল রোগী ছিল দুই হাজার ৬৫০ জন। খালি জেনারেল বেডের সংখ্যা ৯ হাজার ৩৯৮টি। অন্যদিকে এখন মোট আইসিউ বেডের সংখ্যা ১০ হাজার ৭২টি। এর মধ্যে রোগী আছে ৪৪৩ বেডে, বাকি ৬২৯টি খালি। ফলে হাসপাতালগুলোতে এখন করোনা রোগীদের ভর্তি হতে আপাতত কোনো সমস্যা হচ্ছে না—এমনকি অক্সিজেনের সমস্যাও কেটে গেছে। তবে হাসপাতালের বেড কিংবা অক্সিজেন মজুদ এই মুহূর্তে উদ্বৃত্ত থাকলেও মানুষের অনিরাপদ চলাচলের ফলে যেকোনো সময় আবারও তা রোগীতে ভরে উঠতে পারে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক কয়েক দিন ধরেই সতর্ক করে আসছেন। এমনকি তিনি গত বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, দেশে যদি ভারতের মতো বিপর্যস্ত অবস্থা তৈরি হয় তখন হাসপাতালে কোনো কিছুই সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ঈদের আনন্দ, এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় ছোটাছুটি, মার্কেট কিংবা শপিং মলে উপচে পড়া ভিড় না করার পরামর্শ দেন।
অন্য জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও বারবার সতর্ক করছেন, আসন্ন ঈদকে ঘিরে মানুষ আবার যেভাবে বেপরোয়া আচরণ করছে, কোনো রকম স্বাস্থ্যবিধি মানছে না, এর পরিণতি ঈদের দুই সপ্তাহ পরে এখনকার তুলনায় ভয়ানক হয়ে উঠতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডাক্তার নাসিমা সুলতানা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সংক্রমণ কমে যাওয়ায় হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ কমে গেছে, ফলে বেড খালি হওয়া স্বাভাবিক। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, সংক্রমণ এখনো প্রত্যাশিত হারে কমছে না, বরং ওঠানামা করছে। এ ক্ষেত্রে সংক্রমণ কমাতে হলে প্রথমত সবাইকে অবশ্যই পরিপূর্ণভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, মাক্স ব্যবহার করতে হবে এবং শারীরিক দূরত্বও নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়া খুবই ভালো। অন্যদিকে যারা আক্রান্ত হচ্ছে বা পরীক্ষায় যাদের রেজাল্ট পজিটিভ আসছে তাদের এবং তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছে তাদের সবচেয়ে বেশি সুরক্ষামূলক ব্যবস্থার মধ্যে থাকতে হবে। তা না হলে আক্রান্তদের মাধ্যমে অন্যরা সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।’
ওই কর্মকর্তা বলেন, সংক্রমণ যত দ্রুত কমবে, মৃত্যুও তত দ্রুত কমে আসবে। এ জন্য সরকারের পক্ষ থেকে যেসব নির্দেশনা মানতে বলা হচ্ছে সেগুলো সবাইকে মেনে চলা জরুরি।
আরো ৩৭ জনের মৃত্যু
গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় আরো ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল নতুন শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ৬৮২ জন, সুস্থ হয়েছে দুই হাজার ১৭৮ জন। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার আগের দুই দিনের চেয়ে আবার কিছুটা বেড়ে ১০ শতাংশের কাছাকাছি এসেছে (৯.৮৯)। আগের দুই দিন তা ছিল ৮ শতাংশের ঘরে।