ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা দেখে ইমরান নিজেই অবাক

সদ্যই ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন। কিন্তু এই ক্ষমতাচ্যুতিই হয়ত আশীর্বাদ হতে যাচ্ছে ইমরান খানের জন্য। কারণ, পাকিস্তানের সাধারণ জনগণ এখন বুঝতে পেরেছেন বিরোধী জোটের নেতারা পাকিস্তানকে একটা গোলামী  রাষ্ট্রে পরিণত করতে যাচ্ছে বিদেশীদের এজেন্ডা বাস্তবায়নেই মূলত ইমরান খানকে সড়িয়ে দেয়া হয় ক্ষমতার মসনদ থেকে। বিষয়টি পাকিস্তানের জনসাধারণকে খুব করে ব্যাথিত করেছে। যে কারণে ক্ষমতা হারানো ইমরানের পক্ষে পাকিস্তানের জনসাধারণ রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভ করেছে। লাখো মানুষের সে উপস্থিতি দেখে ইমরান খান নিজেই অবাক হয়েছেন।

২০২০ সালে জাতীয় পরিষদে এক ভাষণে ইমরান খান বলেছিলেন, ‘আমেরিকানরা যখন অ্যাবোটাবাদে ঢুকে ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করেছিল, তাঁকে শহীদ করে দিয়েছিল, তখন আমরা পাকিস্তানিরা কীভাবে বিব্রত হয়েছিলাম, সে কথা আমি কখনোই ভুলব না।’ ওসামা বিন লাদেনকে ‘শহীদ’ আখ্যা দেওয়ায় দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে ইমরান খান ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তাঁর বক্তব্য প্রত্যাহার করেননি। কারণ তিনি জানতেন, এ ধরনের বিতর্কিত কিন্তু জনমোহিনী বক্তব্যে জনপ্রিয়তা কমে না, বরং বাড়ে।

রোববার রাতের বিক্ষোভের ভিডিও নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন ইমরান। ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘দুর্বৃত্তদের নেতৃত্বে আমদানি করা সরকারকে প্রত্যাখ্যান করে আমাদের ইতিহাসে এত স্বতঃস্ফূর্তভাবে এত সংখ্যক মানুষ কখনোই নামেনি।’ ইমরানের এ কথায় খুব ভুল কিছু নেই। স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে এভাবে এত লোক পাকিস্তানের ইতিহাসে কোনো গদি হারানো প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে এবং ‘আমদানি করা সরকার’ বসানোর প্রতিবাদে রাস্তায় নামেনি।

ইমরানকে সরিয়ে দেওয়ার পর তাঁর এত জনপ্রিয়তা দেখা যাচ্ছে

পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ অবস্থায় আছে। জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। এতে সাধারণ মানুষ ইমরানের ওপর বেশ খেপেও ছিল। কিন্তু ইমরানকে সরিয়ে দেওয়ার পর কেন তাঁর এত জনপ্রিয়তা দেখা যাচ্ছে? ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট যখন ইমরান প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ পড়েন, তখন তাঁর পক্ষে স্বতঃস্ফূর্ত জনসমর্থন ছিল না। তখন অনেকে কোনো রকম রাখঢাক না করেই বলেছিলেন, সেনাবাহিনীর পছন্দ অনুযায়ী তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। এই জনধারণার কথা ইমরানও ভালো করে জানতেন। সে কারণে দ্রুত জনগণের মনের মধ্যে জায়গা করে নেওয়ার জন্য তিনি বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে ওঠা পপুলিজম বা জনমোহিনী নীতিই বেছে নেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে হয়ত আগামী ২ মাসের মধ্যেই একটা ফ্রেশ নির্বাচন হবে। সেখানে যতই মার্কিন ম্যাকানিজম খাটানো হোক এককভাবে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে তার দল। কারণ তিনি জনগণকে বুঝাতে সামর্থ হয়েছেন পাকিস্তানের জন্য এই মুহুর্তে সবচেয়ে যোগ্য লোক কে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Created with Visual Composer