অতি সম্প্রতি পৃথিবীর জন্মেরও আগের গহীন মহাশূন্যের হাজারো ছায়াপথের ছবি তুলে পাঠিয়েছে নাসার ‘জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (জেডব্লিউএসটি)’। বিষয়টি নিয়ে এখনও চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। নিজস্ব ওয়েবসাইটে নাসা জানিয়েছে, ওয়েব টেলিস্কোপ ‘এসএমএসিএস -৭২৩’-এর যে ছবিটি তুলেছে, ছায়াপথ গুচ্ছটি সেই অবস্থায় ছিল ৪৬০ কোটি বছর আগে। মজার বিষয় হচ্ছে, বিজ্ঞানীদের হিসেবে পৃথিবীর বয়স আনুমানিক ৪৫৪ কোটি বছর (কম-বেশি পাঁচ কোটি বছর)। এ এ নিয়ে নেট দুনিয়ায় চলছে তুলকালাম। তর্কের শেষ বিন্দু এসে মিলিত হয়েছে সেই চিরায়ত বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দ্বন্দ্বেই। কেউ কেউ বলছেন ৪৬০ কোটি বছর আগের ছবি তোলা বাতুলতা এবং বিজ্ঞানকে নিয়ে অতি আশার মত ব্যাপার । কারণ মাত্র ১৮ বছর আগে ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে কারা কিভাবে ২১শে আগস্ট এর গ্রেনেড হামলায় অংশ নিয়েছিলো তার ছবি দিতেই অক্ষম জেমস ওয়েবের এই টেলিস্কোপ। বাস্তবতা সে কথাই বলবে।
মাত্র ৩.৫ হাজার বছর আগের ফেরাউনের লাশ ও তার পরিণতির কথা বিশ্বাস করেন না অথচ ৪.৫ কোটি বছর আগের কোন কিছু নিয়ে লাফাচ্ছেন! হায়রে মূর্খ বাঙালি !
এ বিষয় মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেন- আজ আমি তোমার (ফেরাউনের) দেহটি রক্ষা করব যাতে তুমি তোমার পরে যারা থাকছে তাদের জন্য নিদর্শন হও। অবশ্যই মানুষের মধ্যে অনেকেই আমার নিদর্শন সম্বন্ধে গাফেল। (ইউনুস, আয়াত: ৯২)
কলা বিজ্ঞানীদের দাবি সারে তিন হাজার বছর আগের কোন মানুষকে এত এত বছর সংরক্ষণ করা সম্ভব নয়! আর আল্লাহ বলেন কেয়ামত পর্যন্ত ফেরাউনের লাশ সংরক্ষিত থাকবে। দুনিয়ার নাস্তিকদের বলবো পারলে ফেরাউনের লাশটি ধ্বংস বা গায়েব করে দেখাও- পারবে? দুনিয়ার সমস্ত নাস্তিক, সমস্ত ইসলাম বিরোধীরা একজোট হলেও ফেরাউনের লাশ কেয়ামত পর্যন্তই অক্ষত থাকবে। কারণ, এটিই আল্লাহর চাওয়া। যেন তার বান্দারা হেদায়েত লাভ করেন। কাজেই ৪.৫ কোটি বছরের ফোটিগ্রাফি বাদ দিয়ে আগে ৩.৫ হাজার বছর আগের ফেরাউনের পরিণতি সম্পর্কে অবগত হোন। উপলব্ধি করুন, আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না। তাদের পরিণতি ফেরাউনের মতই হয়।
মাত্র ৪০ বছর আগের একটি ঘটনা তুলে ধরছি-
ডক্টর মরিস বুকাইলি ইসলাম গ্রহণের এক বিস্ময়কর ঘটনা আমরা শুনতে পাই। ১৯৮১ সালে মিসর থেকে ফেরাউনের লাশ আনা হয়েছিল ফ্রান্সে। রাজকীয় সম্বর্ধনা দেয়া হয়েছিল সেই লাশকে। লাল গালিচা সংবর্ধনা দিয়ে বরণ করা হয় ফেরাউনকে। এর আগে তার পাসপোর্ট তৈরি করতে হয়। পাসপোর্টে তার পরিচয়ে লেখা হয় মহান মিসর সম্রাট। ফ্রান্সের আইন হিসেবে জীবিত বা মৃত কেউ ফ্রান্সে পাসপোর্ট ছাড়া ঢুকতে পারে না। নিয়ম মেনেই তাকে ফ্রান্সের ল্যাবে হাজির করা হয়। বিখ্যাত সব সার্জন ও বিজ্ঞানীরা সারা রাত গবেষণা করে আবিস্কার করেন যে ফেরাউনের মৃত্যু হয়েছে সাগরে। তার শরীরে লবনের কণা পাওয়া গেছে। সাগরে ডুবে মরা ছাড়া এমন লবন কণা পাওয়া সম্ভব নয়।
এ ছাড়া তার কয়েকটি হাড্ডিতে চোটের চিহ্নও প্রমাণ করে বড় বড় ঢেউ রুখতে গিয়ে তার এ অবস্থা হয়েছে। ডক্টর মরিস বুকাইলিকে কেউ একজন বলে মুসলমানদের কোরআনেও এমন তথ্য রয়েছে। বুকাইলি বিস্মিত হন। বলেন, অসম্ভব, ফেরাউনের মৃত্যুর এ তথ্য আমরা কেবলই আবিস্কার করলাম। আজ থেকে চৌদ্দশ বছর আগে মোহাম্মাদ কী করে এমন কথা বলবেন? পরে তিনি কোরআন শরিফ খুলে নিজে যখন এসব আয়াত দেখেন তখন সঙ্গে সঙ্গে ইসলাম গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ। এ থেকে প্রমাণ হয় যে কোরআন আল্লাহর কালাম। বাস্তবতা হলো পৃথিবীর যতই বয়স বাড়বে আস্তে আস্তে ততই ঈমানদার মানুষের সংখ্যা কমতে থাকবে। মানুষজন দিনে দিনে ইসলাম বিমুখ হয়ে পড়বে। আর এসবই কেয়ামতের দিকে ধাবিত হওয়ার লক্ষণ। যা ইসলাম- কোরআন ও হাদীসে বর্ণনা করেছে। কাজেই বিস্মিত হবার কিছুই নেই। মহান আল্লাহর সৃষ্ট জীব তার জ্ঞান দিয়ে বিজ্ঞানকে সমৃদ্ধ করছে তাতে কারও কোন আপত্তি নেই কিন্তু বিপত্তি তখনই যখন বিজ্ঞানের জয়যাত্রাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে সৃষ্টিকর্তাকেই অস্বীকার করা শুরু করে। পৃথিবীর সকল জ্ঞানের শেষ বিন্দু এসে থেমে যায় এই বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দ্বন্দ্বেই!