‘জয়ের মধ্যে দ্রাবিড়-ইউসুফের ব্যাটিং টেকনিক দেখেছিলাম’

দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে দেশের হয়ে প্রথমবারের মতো সেঞ্চুরি করার গৌরব অর্জন করেছেন জাতীয় দলের তরুণ ক্রিকেটার মাহমুদুল হাসান জয়। তার কৃতিত্বপূর্ণ সেঞ্চুরিতে নিজ জেলা চাঁদপুরে বইছে আনন্দের ঢেউ। চায়ের দোকানে, বাসায় বসে টিভিতে জয়ের কৃতিত্ব দেখেছেন জেলার ক্রিকেটপ্রেমীরা।

দেশের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম সেঞ্চুরি করা জয়ের ক্রিকেটে হাতেখড়ি চাঁদপুর ক্লেমন ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে। ১০-১২ বছর আগে এ অ্যাকাডেমি থেকে ক্রিকেটে পথচলা শুরু জয়ের। সেখানে ছোট্ট জয়ের প্রথম কোচ ছিলেন শামীম ফারুকী। তিনি চাঁদপুর ক্লেমন ক্রিকেট অ্যাকাডেমির। তার হাত ধরেই জয় বিকেএসপিতে ভর্তি হয়েছিলেন।

জয়ের মধ্যে রাহুল দ্রাবিড় এবং মোহাম্মদ ইউসুফকে খুঁজে পেয়েছিলেন এই কোচ। জয়ের প্রথম কোচ শামীম ফারুকী বলেন, ‘আমি জয়ের মাঝে সেই রাহুল দ্রাবিড়, মোহাম্মদ ইউসুফের ব্যাটিং টেকনিক দেখেছিলাম। তাদেরকে আউট করা যেমন দুষ্কর ছিল, জয়ও ছোটবেলা থেকে ঠিক সেভাবেই ব্যাটিং করতো। আমি মনে করি, বাংলাদেশের জন্য জয় বড় সম্পদ। রাহুল দ্রাবিড় ও মোহাম্মদ ইউসুফের মতো একজন প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান ও।’

তিনি বলেন, ‘যদিও তার কিছু ভুল-ত্রুটি এখনো রয়েছে। এগুলো হয়তো দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারবে। যেহেতু বিশ্বমানের অনেক কোচের আন্ডারে ও এখন প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। আমি ওর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি। ওর ফোকাস যেন সবসময় ব্যাটিংয়ের প্রতি থাকে এবং খেলার প্রতি থাকে, সে জন্য দোয়া করি। যেহেতু ও অনেক পরিশ্রমী তাই নিত্যনতুন অনেক কিছুই শিখছে। আমি তার সাফল্য কামনা করি।’

jagonews24

ক্রিকেটার জয়ের বাবা মো. আব্দুল বারেক। ছবি: জাগো নিউজ

এদিকে, ছেলের এমন কৃতিত্বে বেজায় খুশি জয়ের বাবা-মাও। দেশের জন্য এমন আরও কৃতিত্ব অর্জন করুক জয়, সেজন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইলেন তার বাবা।

জয় চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ১০নং দক্ষিণ গোবিন্দপুর ইউনিয়নের পশ্চিম লাডুয়া গ্রামের মো. আব্দুল বারেকের ছেলে। এলাকায় সবাই জয় নামেই ডাকে তাকে। বাবা আবদুল বারেক পূবালী ব্যাংকের চাঁদপুর শহরের বাবুরহাট শাখায় সিনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত। মা হাছিনা বেগম গৃহিণী। চার ভাই-বোনের মধ্যে জয় তৃতীয়।

ছোট্ট গ্রামের সেই জয় আজ বিশ্বজয়ের প্রতিক্ষায়। ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটপাগল জয় খেলার জন্য বাবা-মায়ের বকুনি খেয়েছেন। তবে চাচা কর্নেল বশিরুল ইসলামের অনুপ্রেরণায় বিকেএসপিতে ছেলেকে ভর্তির চিন্তা করেন বাবা আব্দুল বারেক।

জয়ের বাবা ব্যাংকার আব্দুল বারেক বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে জয় বাংলাদেশের হয়ে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করলো। ছুটির দিন হওয়ায় পুরো খেলা দেখেছি। খুবই আনন্দ লেগেছে। ছেলে যাতে ভবিষ্যতে আরও ভালো খেলতে পারে এবং দেশের জন্য মর্যাদা বয়ে আনতে পারে, সেজন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।’

চায়ের দোকানে বসে জয়ের কৃতিত্ব দেখেছেন চাঁদপুরের অনেক ক্রিকেটপ্রেমী। তাদের মধ্যে কয়েকজন জাগো নিউজকে বলেন, জয় আমাদের চাঁদপুরের ছেলে, এটা আমাদের জন্য গর্বের। তিনি সারা বিশ্বে আমাদের চাঁদপুর তথা বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করছেন। আমরা জয়ের আরও সাফল্য কামনা করি এবং ভবিষ্যতে দেশের জন্য আরও কৃতিত্ব বয়ে আনুক, সেই কামনা করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Created with Visual Composer