ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে ‘পড়ে’ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বুধবার সকাল ১০টার দিকে হলের সন্তোষচন্দ্র ভবনে লিমন কুমার রায় নামে ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। লিমন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। থাকতেন একই ভবনের ৪০২১ নম্বর রুমে।
বর্তমানে তাঁর মৃতদেহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি ভবনের মর্গে রাখা আছে। হলের শিক্ষার্থীরা বলছেন, সকাল ১০টার দিকে সন্তোষচন্দ্র ভবনের সামনে কিছু শিক্ষার্থী তাঁকে দেখতে পান। এ সময় হলের কর্মকর্তা মানিক কুমার দাস তাঁকে নিয়ে রিকশায় করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসেন। এখানে তাঁকে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
লিমন কুমারের এক রুমমেট বলেন, “আজকে ওর ইনকোর্স পরীক্ষা ছিল। কাল রাতে রুমে পড়াশোনা করেছিল। বিভিন্ন কথার ফাঁক দিয়ে সে বলে, ‘কী যে করি- পড়া মনে থাকছে না। ‘ এরপর আজ সকাল সাড়ে ৮টায় ঘুম থেকে উঠি। ৯টা থেকে আমার ক্লাস থাকায় আমি ফ্রেশ হচ্ছিলাম। এ সময় সে তার বেডে শুয়ে ফোন দেখছিল। তাকে জিজ্ঞেস করি, কী রে পরীক্ষা না তোর? পরীক্ষা দিতে যাবি না? সে বলে, ‘যাব। কিছু মনে থাকছে না। ’ এরপর আমি আচ্ছা বলে রুম থেকে বের হয়ে যাই। তখন রুমে লিমন ছাড়া অন্য আরো দুইজন ঘুমিয়ে ছিল। পরে ক্লাসে এসে শুনি সে মারা গেছে। “
হল কর্মকর্তা মানিক কুমার দাস বলেন, ‘আমি অন্য একটি ভবনে জার্মানির পতাকা লাগানোর জন্য কাজ করছিলাম। এ সময় এক শিক্ষার্থী এসে আমায় বলে, কেউ একজন ওই ভবনের সামনে পড়ে গেছে। আমি গিয়ে দেখি অল্প অল্প নড়াচড়া করছে। এরপর আমি ওঁকে কোলে করে রিকশায় তুলে এখানে মেডিক্যালে নিয়ে যাই। রিকশায় তোলা পর্যন্ত ও একটু নড়াচড়া করছিল। এখানে আনার পর ডাক্তার তাকে স্পটডেড বলেন। ’
জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অতনু বর্মন বলেন, ‘আমিও ঘটনাটা শুনেছি। শুনেছি সে খুব ভালো ছেলে ছিল। সে ডিপার্টমেন্ট নিয়ে একটু চাপে ছিল। এরপর আজ সকাল ৯টায় সে ছাদে উঠেছে। এরপর এ ঘটনা। ’ তবে তিনি নিশ্চিত করে বলেননি যে লিমন লাফ দিয়ে পড়েছেন।
হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মিহির লাল সাহা বলেছেন, ‘১০টার দিকে সন্তোষচন্দ্র ভট্টাচার্য ভবন থেকে পড়ে যায়। শব্দ শুনে হলের শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। ’
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে শাহবাগ থানার ওসি নূর মোহাম্মদ বলেন, ছাদ থেকে কিভাবে পড়ে তাঁর মৃত্যু হলো সেটি তদন্ত হচ্ছে। এ ছাড়াও রমনা থানার জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাদের পর্যবেক্ষণ করার পর ঘটনার কারণ সম্পর্কে জানানো হবে।