ধর্ষণ মামলায় টাঙ্গাইল জেলা বাস মালিক সমিতির মহাসচিব বড় মনি কারাগারে

ধর্ষণ মামলায় টাঙ্গাইল জেলা বাস মালিক সমিতির মহাসচিব বড় মনি কারাগারে। কিশোরী ধর্ষণ মামলায় টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব গোলাম কিবরিয়া বড়মনিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১৫ মে) দুপুরে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রূপম কুমার দাস তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তিনি টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ওরফে ছোটমনির বড় ভাই।

টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক তানবীর আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া বড়মনি কিশোরী ধর্ষণ মামলায় হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। কিন্তু গত ৩০ এপ্রিল চেম্বার জজ আদালত চার সপ্তাহের জামিন স্থগিত করে দুই সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন। গত রোববার ছিল ওই জামিনের শেষদিন। টাঙ্গাইল আদালতের একজন আইনজীবীর মৃত্যুর কারণে গত রোববার কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সোমবার দুপুরে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন বড়মনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

jagonews24

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এস আকবর খান বলেন, আজ দুপুর ১২টার দিকে বড়মনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থণা করেন। এসময় বাদীপক্ষের আইনজীবীরা তার জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত ৫ এপ্রিল রাতে এক কিশোরী বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় গোলাম কিবরিয়া বড়মনির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করে। মামলায় ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা বলে উল্লেখ করা হয়। মামলায় গোলাম কিবরিয়ার স্ত্রী নিগার আফতাবকেও মারধর ও ধর্ষণে সহযোগিতা করার জন্য আসামি করা হয়। মামলায় ওই কিশোরী (১৭) অভিযোগ করে, গোলাম কিবরিয়া তার পূর্বপরিচিত। গত ১৭ ডিসেম্বর তাকে শহরের আদালতপাড়ায় নিজের বাড়ির পাশের একটি ভবনে ডেকে নেন বড়মনি। সেখানে কিশোরীকে ধর্ষণ করেন ও আপত্তিকর ছবি তুলে রাখেন তিনি। পরে আপত্তিকর ওই ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয় বলেও কিশোরী মামলায় উল্লেখ করে।

মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি গোলাম কিবরিয়া জানার পর সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। তবে কিশোরী রাজি না হওয়ায় গত ২৯ মার্চ তাকে শহরের আদালতপাড়ায় গোলাম কিবরিয়ার শ্বশুরবাড়িতে নেওয়া হয়। সেখানে একটি কক্ষে ওই
কিশোরীকে আবার ধর্ষণ করেন তিনি। এরপর ওই কিশোরী গত ৬ এপ্রিল আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেন।

আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেসকে জান্নাত রিপা ওই কিশোরীর জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন। পরে কিশোরীকে তার এক আত্মীয়ের কাছে জিম্মায় দেন আদালত। ওই সময় ডাক্তারি পরীক্ষায় কিশোরী ২৫ সপ্তাহের অন্তঃস্বত্তা বলে জানান টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সাদেকুর রহমান।

Created with Visual Composer