রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন শুরু

ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা যখন তুঙ্গে, তখন বেলারুশে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের খবর পাওয়া গেছে। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো জানিয়েছেন, রাশিয়া তাঁর দেশে যেসব পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করার ঘোষণা দিয়েছিল, সেগুলো আসতে শুরু করেছে।

লুকাশেঙ্কো জানিয়েছেন, ১৯৪৫ সালে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে যুক্তরাষ্ট্র যেসব পারমাণবিক বোমা ব্যবহার করেছিল, সেগুলোর চেয়ে শক্তিশালী এসব অস্ত্র।

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এমন অস্ত্র মোতায়েনের রেকর্ড নেই। ওই সময়ে সোভিয়েতজুড়ে এসব অস্ত্র মোতায়েন ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এসব স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহার করা হতে পারে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন লুকাশেঙ্কো। এই ভিডিও বেলারুশের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বেলতা তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে পোস্ট করেছে। এতে দেখা যায়, লুকাশেঙ্কো বলছেন, ‘রাশিয়ার কাছ থেকে আমরা বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র পেয়েছি। এগুলো হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে নিক্ষেপ করা পারমাণবিক বোমার চেয়ে তিনগুণ শক্তিশালী।’

বেলারুশে শিগগিরই কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করা হবে, তা গত শুক্রবারই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ওই দিন তিনি বলেছিলেন, বেলারুশে এসব অস্ত্র রাখার জন্য অবকাঠামো নির্মাণকাজ চলছে। এসব কাজ শেষ হওয়ার পরই সেখানে অস্ত্র মোতায়েন করা হবে।

এ প্রসঙ্গে লুকাশেঙ্কো ওই সাক্ষাৎকারে বলেন, সোভিয়েত আমলে এসব অস্ত্র রাখার অনেক অবকাঠামো বেলারুশে ছিল। এর মধ্যে পাঁচ-ছয়টি ঠিকঠাক করে নেওয়া হয়েছে।

বেলারুশে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের ঘোষণা পুতিন দিয়েছিলেন গত মার্চে। সেই সময় মস্কো বলেছিল, যুক্তরাষ্ট্র এমন অস্ত্র গত কয়েক দশক ধরে ইউরোপে মোতায়েন করে রেখেছে। যদিও রাশিয়ার এমন সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

রাশিয়ার পক্ষ থেকে সেই সময় বলা হয়েছিল, বেলারুশে যেসব অস্ত্র মোতায়েন করা হবে, সেসব অস্ত্র ব্যবহারের কোনো ইচ্ছা তাদের নেই। এ ছাড়া এসব অস্ত্র রাশিয়া নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা ছিল। কিন্তু এখন ভিন্ন কথা বলছে বেলারুশ। লুকাশেঙ্কো ওই সাক্ষাৎকারে বলেন, যদি এসব অস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা তিনি অনুভব করেন, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলবেন। অর্থাৎ পরোক্ষভাবে এসব অস্ত্র ব্যবহারের ইঙ্গিত দিলেন তিনি।

১০০ বর্গ কিলোমিটার পুনর্দখল

এদিকে রাশিয়া যখন বেলারুশে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করছে, তখন নিজেদের এলাকা ফেরতের লড়াই জোরদার করছে ইউক্রেন। দেশটির জ্যেষ্ঠ সামরিক কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ওলেক্সি হ্রোমভ গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছেন, তাঁরা ১০০ বর্গকিলোমিটারে এলাকা পুনর্নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁরা দোনেৎস্ক ও জাপোরিঝঝিয়ায় সাতটি এলাকা মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। গত সপ্তাহ থেকে এই অভিযান শুরু করেছেন তাঁরা।

সোর্স: রয়টার্স

Created with Visual Composer