রেকর্ডের মালা গেঁথেই আর্জেন্টিনাকে টিকিয়ে রাখলেন মেসি

বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্ন নিয়ে এসে প্রথম ম্যাচেই হোঁচট সৌদি আরবের কাছে। নক-আউটে রাউন্ডে যাওয়াটাই পড়ে গেছে শঙ্কার মধ্যে। দ্বিতীয় ম্যাচে মেক্সিকোর বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াই আর্জেন্টিনার। জিতলে টিকে থাকবে দ্বিতীয় রাউন্ডের আশা, হারলেই বিদায় টুর্নামেন্ট থেকে। এমন সমীকরণ সামনে নিয়ে মেক্সিকোর বিপক্ষে মাঠে নেমে শুরু  থেকেই নিষ্প্রভ আর্জেন্টিনা। প্রথমার্ধে ব্যর্থ মেক্সিকোর রক্ষণদেয়াল ভাঙতে। তবে ভরসা ছিলো একজন মেসি ছিলেন বলেই। সেই মেসি যেন নিজের জাদুটা জমিয়ে রেখেছিলেন দ্বিতীয়ার্ধের জন্য। 

দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমেই মেসির পায়ে দেখা গেলো তার সেই জাদুকরী ঝলক। আর্জেন্টিনাও যেন ফিরলেন চেনা রূপে। মেসি গোল করলেন, গোল করালেন, মেসি জাদুতে ভর করেই আরও একবার উতরে গেলো আলবিসেলেস্তারা। নক-আউটে যাওয়াটা এখনও নিশ্চিত নয় আর্জেন্টিনার, তবে খাঁদের কিনারা থেকে যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা তাতে নতুন কিছুর আশা করতেই পারেন আকাশী নীলের ভক্ত-সমর্থকরা।

আর্জেন্টিনার বাঁচা-মরার ম্যাচে এর আগেও বহুবার জ্বলে উঠেছেন মেসি। আরও একবার জ্বলে উঠলেন কাল। মেক্সিকোর বিপক্ষে মাঠে নেমেই মেসি এদিন ছুঁয়ে ফেলেছিলেন ম্যারাডোনাকে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে সর্বোচ্চ ২১ ম্যাচ খেলার রেকর্ডে পূর্বসূরিকে ছোঁয়া এই ম্যাচে যেন একাই আলো ছড়ালেন মেসি।

শুধু সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ডেই ম্যারাডোনার পাশে বসেননি মেসি, দলের হয়ে প্রথম গোল করে বিশ্বকাপের মঞ্চে ম্যারাডোনার করা ৮ গোলের রেকর্ডও ছুঁয়েছেন এলএম টেন। দ্বিতীয় গোলে অ্যাসিস্ট করে টানা পাঁচ বিশ্বকাপে অ্যাসিস্ট করা একমাত্র ফুটবলার মেসি।

দুর্দান্ত নৈপুণ্যে দলকে তো জিতিয়েছেনই, সঙ্গে এই এক ম্যাচেই একাধিক রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। চলুন, এক নজরে দেখে নেওয়া যাক এই এক ম্যাচেই যতগুলো রেকর্ডের মালিক হয়েছেন মেসি।

মেক্সিকোর বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্সে ম্যাচসেরা হয়েছেন মেসি। বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ম্যাচসেরা হওয়ার রেকর্ডে মেসি এখন যৌথভাবে শীর্ষস্থানে রয়েছেন রোনালদোর সঙ্গে (৭ বার করে)।

পাঁচ বিশ্বকাপে অ্যাসিস্ট করা ইতিহাসের প্রথম ও একমাত্র খেলোয়াড় মেসি।

মেক্সিকোর বিপক্ষে মেসি দলের প্রথম গোলটি করেছেন বক্সের বাইরে থেকে। বিশ্বকাপের মঞ্চে বক্সের বাইরে থেকে করা এটি তার চতুর্থ গোল। ১৯৬৬ সালের পর একমাত্র রিভেলিনো বক্সের বাইরে থেকে মেসির চেয়ে বেশি গোল (৫) করেছেন।

মেক্সিকোর বিপক্ষে এক গোল ও এক অ্যাসিস্ট করে দলকে জিতিয়েছেন মেসি। ২০০৬ সালে বিশ্বকাপের অভিষেক ম্যাচেও সার্বিয়ার বিপক্ষে গোল আর অ্যাসিস্ট করেছিলেন মেসি। ১৯৬৬ সালের পর বিশ্বকাপের এক ম্যাচে গোল এবং অ্যাসিস্ট করা সর্বকনিষ্ঠ এবং বয়োজ্যেষ্ঠ ফুটবলারের দুটি রেকর্ডই এখন মেসির দখলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Created with Visual Composer