হান্টিংটনের ভবিষ্যদ্বানী ও ক্রমবর্ধমান ধর্ম ও সংস্কৃতির দ্বন্দ্ব

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পড়তে গিয়ে হান্টিংটনের ক্ল্যাশ অব সিভিলাইজেশ্যন পড়ার সৌভাগ্য হয়েছিলো। সেখানে জানতে পেরেছিলাম হান্টিংটন ১৯৯৩ সালে ফরেন অ্যাফেয়ার্স জার্নালে ‘ক্ল্যাশ অফ সিভিলাইজেশনস’ নামক নিবন্ধ প্রকাশ করে বলেন- ‘আগামী পৃথিবীর দ্বন্দ্ব-সংঘাত কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শ বা অর্থনৈতিক কারণে হবে না, বরং এর কারণ হবে সংস্কৃতি ও ধর্ম। সেটা ক্রমেই স্পষ্ট হতে চলেছে। বাংলাদেশে এর প্রভাবটা স্পষ্ট।

এই শতকের শুরু থেকেই এই দেশে হুহু করে এথিস্টদের সংখ্যা বাড়ছে। যারা মৌলবাদীদের মতই বিপজ্জনক এবং উগ্র। এড়া কোনভাবেই মেনে নিতে পারে না কেউ নামাজ পড়বে, আল্লাহকে মানবে, পরকালে বিশ্বাস করবে। অপরদিকে আমাদের দেশে কিছু উগ্রপন্থী ধর্মীয় মৌলবাদী আছেন যাদেরকে ক্ষেপিয়ে তোলার মত কিছু শয়তানি বুদ্ধি সবসময়ই ঐ এথিস্ট গ্রুপের সদস্যরা করে যায়। ফলাফল বছরজুড়ে চলতে থাকে সংঘাত। বাংলাদেশে তো মাত্র ১% এর মত এথিস্ট। যদিও ৮০এর দশক কিংবা ৯০ এর দশকে এই দেশে এথিস্টদের সংখ্যা ০.১০% ছিলো। দিন দিন এদের সংখ্যা বাড়ছে আর তাদের মাঝে উগ্রতা বাড়ছে। ভয় হয় যখন সংখ্যাটা ১০% এ চলে যাবে তখন কি হবে? পশ্চিমাদের আশ্রয় প্রশ্রয় তো থাকছেই। বলে রাখা ভালো এরা সেই উগ্র প্রগতিশীল যারা আমাদের ক্রিকোটারদের নামাজ পড়াটাকে মেনে নিতে পারে না। ২০১০ সাল পর্যন্তও এড়া এতটা ইসলাম বিদ্বেষী ছিলো না। কিন্তু শাহবাগের সেই জাগরণের পর থেকে তাদের সাহস বেড়ে গেছে বহুগুণ। এড়া হান্টিংটনের ভবিষ্যদ্বানী প্রমানে মরিয়া। এদের চোখে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামও অর্ডিনারী কারণ নজরুল ইসলামের প্রতি দুর্বল ছিলেন। পরিতাপের বিষয় দেশের মিডিয়াতে এদেরই রাজত্ব। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও এদের রাজত্ব।

সবচেয়ে মজার বিষয় পশ্চিমা দেশগুলোতেও এথিস্ট রয়েছেন। তারা যতটানা ইসলাম বিদ্বেষী তারচেয়ে শতভাগ ইসলাম বিদ্বেষী বাংলাদেশের মুসলিম পরিবারে জন্ম নিয়ে কিছু ভুলভাল বই পড়ে এথিস্ট হওয়া এথিস্টরা! তবে এটা নিশ্চিত সভ্যতার সংকট আসন্ন। সেখানো কেবল দুটো গ্রুপই থাকবে বিশ্বাসী আর অবিশ্বাসী! করোনাকালে এই এথিস্টদের বাড়াবাড়ি পর্বতসীমা অতিক্রম করেছিলো। বিবিসি বাংলাদেশকে করোনার জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছিলো। আল্লাহর যদি অনুকম্পা নাই থাকতো এই দেশে মানুষ মারা যেতে ১০ লক্ষেরও বেশি। বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষদের প্রতি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ দেখেছি। শত অনিয়ম আর কোভিড প্রোটোকল না মানার পরও বাংলাদেশ করোনা প্রতিরোধে বিশ্বের অন্যতম সফল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।

লেখকঃ সম্পাদক ও প্রকাশক
বিডিনিউজ ট্র্যাকার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Created with Visual Composer