আসুন এই অমানবিক গরমে একটু মানবিক হই

প্রচণ্ড গরম পড়ছে ইদানিং। সামনের দিনগুলোতে তাপমাত্রা আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে প্রবল। গরমের এই প্রচণ্ড তাপে ও তৃষ্ণায় স্বাভাবিকভাবেই মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। কারণ গ্রীষ্মকালে পানির উৎস সন্দেহাতীতভাবে কমে যায়। আমরা মানুষেরা গরম থেকে বাঁচতে অফিস-আদালত এবং বাসা-বাড়িতে এসি কিংবা ফ্যান ব্যবহার করতে পারি অথবা বাইরে বের হলে সঙ্গে ছাতা এবং পানি নিয়ে বের হতে পারি কিংবা তৃষ্ণা লাগলে বাহির হতে পানি কিনেও খেতে পারি। কিন্তু মানুষ ছাড়াও এই জগতে উদ্ভিদ এবং অন্যান্য প্রাণী রয়েছে। তাদেরও জীবন আছে, তাদেরও এই গরমে কষ্ট হয়।
আসুন আমরা নিজেদের সুরক্ষার পাশাপাশি তাদেরও সুরক্ষা প্রদান করি। কারণ আমাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন হিসেবেই সৃষ্টিকর্তা উদ্ভিদ এবং প্রাণী সৃষ্টি করেছেন। তাই এদের সুরক্ষার দায়িত্বও আমাদের। বাড়ির আঙিনায়, ছাদে এবং রাস্তাঘাটে ক্রমবর্ধনশীল উদ্ভিদকে এই গরম থেকে বাঁচতে সাহায্য করুন। উদ্ভিদের গোড়ায় সময় করে একটু পানি দিন। বাড়ির গৃহপালিত গরু, ছাগল, কুকুর, বিড়াল, হাঁস-মুরগি, কবুতরসহ অন্যান্য পোষা প্রাণীর দিকে একটু বেশি নজর রাখুন, ওদের এই সময়ে পানির প্রয়োজন।
ওদের জন্য প্রয়োজনীয় পানির ব্যবস্থা রাখুন। শুধু গৃহপালিত প্রাণীর জন্যই না। আমাদের চারপাশে অনেক ধরনের প্রাণী এবং পাখপাখালি রয়েছে। এই গরমে ওদেরও পানির প্রয়োজন। তাই বাড়ির আঙিনায়, ছাদে কিংবা বাসা-বাড়ির চারপাশে পাত্রে পানি রেখে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন, যাতে এই পশু-পাখিগুলোও প্রবল তৃষ্ণায় একটু পানি পান করতে পারে। কারণ এই ঋতুতে ওরা পানির উৎস খুঁজে পায় কম। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষেরও এই সময়ে একটু বেশি সচেতন হতে হবে।আবার, গ্রীষ্মকালে অনেক সময়ই দেখা যায়, গরম থেকে বাঁচতে রাস্তা-ঘাটে কিংবা টার্মিনালে থেমে থাকা বাস-ট্রাক কিংবা বড়ো বড়ো গাড়ির নিচে কুকুর-বিড়ালের মতো কিছু প্রাণী ছায়া পেয়ে ঘুমিয়ে যায়, একটু বিশ্রাম করে। এ সময়ে এই ধরনের যানবাহনগুলো পুনরায় চালানোর সময় হলে যানবাহনের নিচে একটু দেখে নিতে হবে, যাতে কোনো প্রাণী চাকার নিচে পড়ে আহত বা নিহত না হয়।
আসুন, আমরা আর একটু মানবিক হই। মানুষ হিসেবে মানবিকতার চর্চা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। এটা আমার, আপনার এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটা নতুন পৃথিবী গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।